ঢাকাশুক্রবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  1. অপরাধ
  2. আজ দেশজুড়ে
  3. আজকের সর্বশেষ
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আরো
  6. ইসলামিক
  7. কবিতা
  8. কৃষি সংবাদ
  9. ক্যাম্পাস
  10. খাদ্য ও পুষ্টি
  11. খুলনা
  12. খেলাধুলা
  13. চট্টগ্রাম
  14. ছড়া
  15. জাতীয়
আজকের সর্বশেষ সবখবর

একই দিনে পালিত হচ্ছে তিন উৎসব

মশাল
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫ ৪:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

জেডি চক্রবর্তী :: আজ ১৪ ই ফেব্রুয়ারী শুক্রবার, আজকের এই দিনে একই সাথে ৩ টি উৎসব বসন্ত উৎসব, ভালোবাসা দিবস ও পবিত্র শবে বরাত।

বছরঘুরে আবার এলো বসন্ত। প্রকৃতিতে তাই লেগেছে রংয়ের ছোঁয়া। দক্ষিণা দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। কোকিলের কণ্ঠে আজ বসন্তের আগমনী গান। ফুলে ফুলে ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। সব কিছুই জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন।

ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এতো বর্ণিল সাজ সেজেছে। বসন্তের এই আগমনে প্রকৃতির সাথে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা।শীতকালে ঝরে পড়া পাতার ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে গাছে গাছে আবার নতুন পাতা গজায়। গাছগুলো সবুজ পাতায় ছেয়ে যায়, পাতার ফাঁকে বসে কু-হু-কু-হু গান ধরে কালো কোকিল। ফুলে ফুলে ভরে যায় গাছ গাছালি। মনের আনন্দে পাখিরা গান গাইতে শুরু করে। লাল- নীল- হলুদ- সাদা ফুল সহ হাজার রঙের ফুল ফোটে বসন্তে !

বসন্ত নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামসহ অনেকেই লিখেছেন গান, কবিতা। বসন্ত নিয়ে বর্তমান সময়ে খুব একটা রচিত হয়নি গান- কবিতার পঙ্ক্তিমালা। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসন্ত নিয়ে অনেক গান-কবিতা লিখেছেন। তার মায়ার খেলা গীতিনাট্যের ‘আহা আজি এই বসন্তে, এতো ফুল ফোঁটে, এতো বাঁশি বাজে এতো পাখি গায়।’

শীতের চলে যাওয়ার পর বসন্তকাল বাংলাদেশের প্রকৃতিতে রমণীয় রূপে আসে। সকল কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে, নতুন কিছুর প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্তের উপস্থিতি। তাই কবির ভাষায়- ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’।

আজকের এই দিনটিতে বৃদ্ধ- বৃদ্ধা, তরুণ- তরুণী সহ সকল শ্রেণি পেশার সকলেই মেতে ওঠেন বসন্ত উম্মাদনায়। শীতকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়েই বসন্ত বরণে চলে ধুমধামে নানা আয়োজন। শীত চলে যাবে রিক্ত হস্তে, আর বসন্ত আসবে ফুলের ডালা সাজিয়ে। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের জরা- জীর্ণতা।

বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় মেলা, সার্কাসসহ নানা বাঙালিয়ান নানা আয়োজনের সমারোহ থাকে। ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তি রঙ্গেই। শীতের সঙ্গে তুলনা করে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসবও।

এ ঋতুতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনকে প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যায়। আত্মভোলা মনে জাগে গান। রক্তবর্ণের শিমুল, পলাশ ও কৃষ্ণচূড়া এ সময়েই ফোটে। আমগাছ সাজে নব মঞ্জরিতে শোভিত হয়ে। ভ্রমর মনের আনন্দে গুঞ্জন করতে করতে সুগন্ধি পুষ্প ও আম্র মঞ্জরির মধু পানে মত্ত হয়। যব, গম, সরিষা ইত্যাদি শস্যে মাঠগুলো রমণীয় শোভা ধারণ করে। এবং এই দিনটিকে আরো উপভোগ্য করে তুলতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন গ্রহণ করে থাকে নানা আয়োজন।

চারদিকে প্রাণের স্পন্দন,.. সাজ সাজ রব। কংক্রিটের জঙ্গল পাড়ি দিয়ে বসন্তের দখিন হাওয়া উচ্ছ্বাসের রং ছড়িয়েছে যায় সবার মনে। প্রতিবছরের মতো এবারো, এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ স্লোগান নিয়ে, ফাল্গুনের প্রথম প্রহরে চারুকলার বকুলতলায় আয়োজন করা হয় বসন্ত বরণ উৎসব। ঠিক তখনই বাধ সাধে অনুমতি নিয়ে রাজধানী ঢাকার উত্তরা ও পাশাপাশি ঢাবির চারুকলার বকুলতলা এবং পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল কিন্তু বাঁধার মুখে তা বন্ধ করতে বাধ্য হলেন কতৃপক্ষ।

পলাশ রাঙা সকালে দখিনা হাওয়ায় আমের মুকুলের দোলা জানান দিলো, এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। জীবনের এসেছে পূর্ণতা। নতুন প্রাণের কলরব। চারুকলার বকুলতলায়, তাই বসন্ত বরণের উৎসবে টানে, দালানের খোলস ছেড়ে বাসন্তী সাজে জড়ো হন নগরবাসী। সুরের সম্মোহনে বকুলতলায় ফাল্গুনের প্রথম প্রহরে মিলে মিশে একাকার হয় প্রকৃতি আর মানুষ।

বসন্তের এই বর্ণিল সাজ…রঙের ছটা.. ইট- পাথরের এই নগর বাসীর জীবনে ছড়িয়ে থাক বছর জুড়ে..এমন প্রত্যাশায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদা হল প্রাঙ্গণে পাঠশালার আয়োজনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পালন করা হয়েছে। এবং ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ মুরারি চাঁদ এম সি কলেজ প্রাঙ্গণে মোহনা সাংস্কৃতিক সংগঠন এর বসন্ত বরণ উৎসব আয়োজন করা হলেও একই দিন দিবাগত রাত পবিত্র শবে বরাত হওয়ায় অনুষ্ঠানটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রকৃতি বৈচিত্র্যময়। প্রতিটি ঋতুতেই এই বৈচিত্র্য সৌন্দর্য ছড়ায়। তবে বসন্তের সৌন্দর্য উপমাহীন। এর সাথে তুলনা চলে না অন্য কোনো ঋতুর। এমন ফুলেল সময় আর কখনো দেখা যায় না। শীতের জীর্ণতা শেষে প্রকৃতিতে যে উষ্ণতা আসে সেই উষ্ণতায় মানুষের মনও প্রকৃতির সাথে পাল্লা দিয়ে জেগে ওঠে নতুনের আহবান।

বসন্তের প্রথম সকালে বাসন্তি রঙা শাড়ি, কপালে টিপ, হাতে চুড়ি, পায়ে নূপুর, খোঁপায় গাঁদা ফুল জড়িয়ে বেরিয়ে পড়বে তরুণী -বধূরা। বাসন্তি পাঞ্জাবি, ফতুয়া পরা হাজারো ছেলে-বুড়োর ঢল নামবে বসন্ত বরণের নানা আয়োজনে। বসন্তের আহ্বানে ফাগুনের ঝিরি ঝিরি হাওয়া, রক্তিম পলাশ, শিমুল, কাঞ্চন পারিজাত, মাধবী, গামারী আর মৃদু গাঁদার ছোট ছোট ফুলের বর্ণিল রূপে চোখ জুড়াবে। বসন্ত তারুণ্যেরই ঋতু, তাই সবারই মনে বেজে ওঠে, কবির এ বাণী- ‘বসন্ত ছুঁয়েছে আমাকে। ঘুমন্ত মন তাই জেগেছে, পয়লা ফাল্গুন আনন্দের দিনে’।

বসন্ত উৎসব বাঙালির প্রাণের উৎসব। বর্ষবরণ, নবান্ন উৎসব, পৌষমেলা- এসবের মতো বসন্ত উৎসবও বাঙালি চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ। যার মাধ্যমে সৃষ্টি হয় পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহনশীলতা। দৃঢ়তর হয় মৈত্রীর বন্ধন। শুধু রাজধানীতে নয়, দেশজুড়ে বসন্তের আবাহনে আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠান। প্রকৃতি আর মানুষের এই মিলনমেলা গোটা দেশকে মাতিয়ে তোলে আনন্দ হিল্লোলে। ইথারে ইথারে তার রেশ ছড়িয়ে পড়ে বাংলার ঘরে ঘরে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।