সিলেটে হোটেল কর্মচারী রুমন খুনিদের রক্ষায় প্রভাবশালী মহল তৎপর
এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া : সিলেটের কাজির এক কাপ চা দিতে দেরি করার সূত্র পাতে চায়ের দোকান কর্মচারী খুনের ঘটনা ভিন্ন কালে প্রবাহিত করতে ও স্থানীয় কলোনির ভাড়াটিয়া লাঠিওল বাহিনীকে রক্ষায় একটি প্রভাবশালী মহল তৎপর হয়ে উঠেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে এ বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের রয়েছে কঠোর নজরদারি ।
হোটেল কর্মচারী রুমন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইতিপূর্বেই পরিবর্তন করা হয়েছে, লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির আইসি কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের এসআই আলী খানকে বাদ দিয়ে এস আই শিপলু কে দেয়া হয়েছে এ মামলার নতুন তদন্ত কর্তা।
খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার, জালালপুর বাজারসহ ও স্থানীয় এলাকা।
হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন ও বিক্ষোভ করেছে সিলেট মহানগরে।
সিলেট নগরের কাজির বাজারে চা দিতে দেরি করায় আলোচিত হোটেল কর্মচারী রুমন খুনের মূলহোতা আব্বাস( ৫৫)কে আটকের পর সোমবার সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতের প্রধান বিচারক শরিফুল হক এর নিকট এজলাসে হাজির করলে ঘটনার দায়া স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়নি। যদিও পুলিশের কাছে অনেকটা স্বীকার করেছিলো। তবে আদালতের নির্দেশে ১৪ জুলাই সোমবার তাকে পাঠানো হয়েছে কারাগারে।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল হক বলেন,রুমন হত্যা মামলার অগ্রগতির জন্য তদন্ত কর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শিপলু।
রুমন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শিপলু জানান, এ মামলার দায়িত্ব নতুন করে আমাকে দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর কারাগারে থাকা আটক আব্বাসকে সাত দিনের রিমান্ডে আবেদন করা হয়েছে। আদালত মঞ্জুর করলে এ ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অন্য আসামীদের গ্রেফতার সন্দেহাতীত জায়গাগুলোতে অভিযান করা হচ্ছে। আসামি গ্রেফতার নিয়ে আমি দৌড়ের উপরে আছি।প্রভাবশালীদের কোন তদবির তদন্ত কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারবে না বলেও জানান তিনি।
তবে পুলিশের এডিসি মিডিয়া সাইফুল ইসলাম জানান, খুনের ঘটনায় আসামি আব্বাস আদালতে দায় স্বীকার না করায় পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে আদালত এখনো তার শুনানি করেননি। অন্য আসামি গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এজহার সূত্রেও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসামি আব্বাস মিয়া ১৩ জুলাই সকাল ৭টায় কাজির বাজার, শাপলা হোটেলে চা খাওয়ার জন্য যান।হোটেল কর্মচারী রুমন কে চা দিতে বলেন। কিন্ত চা দিতে দেরি হবে বলায় রোমানের সাথে শুরু করেন উচ্চ বাক্য গালিগালাজ। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে হোটেল মালিক ও উপস্থিত লোকজন মীমাংসা করে দেন। কিন্তু সকাল ৯ টায় আব্বাস মিয়া তার ছেলে খোকন( ৩৫), মোহন( ৩৭), রোকন (৩০), রুহান (২৫) সহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নিয়ে শাপলা হোটেলে ভেতরে ঢুকে শাটার বন্ধ করে হোটেল কর্মচারী রুমনের ঊপর চালান অমানবিক নির্যাতন। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে একের পর এক স্টপিং এতে অনেকটি লক্ষ্যভ্রষ্ট বুকে আর দুপাশে চারটি স্তূপিং এর দৃশ্যমান চিহ্ন রয়েছে হোটেল কর্মচারী খুন হওয়া দিদার আহমদ রুমনের শরীরে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর কিলিং মিশন শেষ করে আব্বাস বাহিনীর প্রধান আব্বাস তার বাহিনী নিয়ে ঘটনা স্থল ত্যাগ করেন। দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত থাকায় কেউ তাদের আটকাতে সাহস করেনি।
মামলার বাদী রুমনের ভাই রেজু মিয়া বর্তমান সরকারের -ই চান তার ভাইয়ের খুনিদের বিচার। জালালপুর এলাকার আজাদ মিয়া জানান, ন্যায়বিচার বঞ্চিত হলে শ্রমজীবী রুমন খুনের
বিচারের আওয়াজ তোলা হবে রাজপথে।
ঘটনার মূলহোতা আব্বাস (৫৫) তোপখানা একটি কলোনিতে বারা থাকেন দীর্ঘদিন থেকে। তার মূল বাড়ি সুনামগঞ্জে। দীর্ঘদিন থেকে সিলেটে থাকার সুবাদে একটি বিশেষ মহলের শেল্টারে আব্বাস গড়ে তুলেছেন একটি অপরাধী সিন্ডিকেট ।
কেউ কেউ মৎস্যজীবী হিসেবে আব্বাসকে চিনলেও অন্যরা চিনে রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট ব্লেকার হিসেবে। দীর্ঘদিন আগে থেকে আব্বাস সিলেট শহরে এসে আওয়ামী লীগের নেতাদের শেল্টারে অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করলেও ৫ আগস্টের পর কোন এক বিএনপি নেতার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে এই আব্বাস বলে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অনেকেই জানিয়েছেন।
রাত্রিকালীন সময়ে ও ভোর রাতে আব্বাসের ছেলেরা সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে কাজির বাজার রোডের বিভিন্ন পয়েন্টে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অত পেতে থাকে। ঘটায় বিভিন্ন অপকর্ম ও চুরি, ছিনতাই। কিন্তু মানুষজন ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে নালিশ পর্যন্ত করেনা। আব্বাসের সকল অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বের হয় ঘর থেকে।ঘটনার দিন একই রকম তারা বাইরে ছিল খবর পেয়ে আসতে দেরি হয় ৭ টার ঘটনা ৯টায় ঘটে।
রুমন খুনের ঘটনায় তার ভাই মো: রেজু মিয়া বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। যার নং ১৯ রুমন মোগলা বাজার থানার জালালপুর এলাকার সব্দালপুর গ্রামের মৃত তখলিছমিয়ার পুত্র ।