নিজস্ব প্রতিনিধি, গোয়াইনঘাট (সিলেট) : সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ‘উন্নয়ন প্রকল্প’ নামের আড়ালে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। বিশেষ করে পশ্চিম জাফলং, পূর্ব জাফলং, মধ্য জাফলং, পশ্চিম আলীরগাঁও ও পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়নের নদীপথে রশিদ সন্ত্রাস নামে পরিচিত একটি চক্র প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই চক্রের সঙ্গে স্থানীয় কিছু পাতি নেতা জড়িত থাকলেও তাদের পেছনে রয়েছেন রাজনৈতিক পরিচয়ে বলীয়ান প্রভাবশালী নেতারা। অথচ প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ট্রলিচালকদের অভিযোগ, নদীপথে বালু-পাথরসহ যেকোনো মালামাল পরিবহন করতে গেলেই বিভিন্ন পয়েন্টে বাধ্যতামূলকভাবে চাঁদা দিতে হচ্ছে। কথিত উন্নয়ন কমিটির নাম ব্যবহার করে ভুয়া রশিদ প্রদান করে প্রতিটি নৌযান থেকে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকারও বেশি আদায় করা হচ্ছে। অনেকে বলছেন, “এই টাকা না দিলে নৌকা থামিয়ে দেয়, মালামাল নামাতে দেয় না। বাধা দিলে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়।”
বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হলো, এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত কিছু লোক স্থানীয় বড় রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, “কিছু পাতি নেতা ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে রীতিমতো সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। প্রশাসন জানে সব কিছু, কিন্তু চুপ করে আছে।”
গোয়াইনঘাটের একজন বিশিষ্ট নাগরিক বলেন, “উন্নয়নের নামে নদীপথে এমন প্রকাশ্য চাঁদাবাজি চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ আর ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এতে এলাকার পরিবহন খাতও হুমকির মুখে পড়বে।”
এদিকে প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মহল। অনেকে বলছেন, এই চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে গোয়াইনঘাটে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার একজন কর্মকর্তাকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমরা শুনেছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা দাবি করছেন, দ্রুত এই অবৈধ চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।