সিলেটের কাজির বাজারে হোটেল কর্মচারী রুমন হত্যা মামলায় অজানা স্বামী আব্বাসের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
ডেক্স রিপোর্ট : সিলেটের কাজির বাজারে চা দিতে দেরি করে প্রকাশ্য দিবালোকে হোটেল কর্মচারী রুমন হত্যা মামলায় এজহার নামীয় প্রধান আসামি আব্বাস (৫৫) এর ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল সোমবার সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালত এর বিচারক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ রিমান্ড আবেদন শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মনজুর করেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরীর আলোচিত কাজির বাজারে চা দিতে দেরি করায় হোটেল কর্মচারী রুমন( ২২) খুনের হুকুম দাতা মামলার প্রধান আসামী পুলিশের হাতে আটকের পর কারাগারে থাকা আব্বাস (৫৫ ) এর রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয় ২১ জুলাই সোমবার।
পুলিশের পক্ষ থেকে ৭ দিনের রিমান্ডে আবেদন করা হলে ও আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ।
আব্বাস পুলিশের কাছে রুমন খুনের ঘটনা স্বীকার করলেও আদালতে স্বীকার না করায় রিমান্ড আবেদন দিয়েছে কতোয়ালি থানা পুলিশ।
কতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি জিয়াউল হক জানান, এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্তা লামা বাজার পুলিশ ফাঁড়ির আইসি উপ পুলিশ পরিদর্শক আলী খান কে বাদ দিয়ে এসআই শিপলু চৌধুরীকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা দেওয়া হয়েছে। মামলার অগ্রগতির জন্য। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আশা করি জিজ্ঞাসাবাদে মূল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
১৪ জুলাই আটকের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় এ মামলার প্রধান আসামি আব্বাস( ৫৫) কে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই শিপলু চৌধুরী জানান,জড়িতদের গ্রেফতার করতে দিনরাত চেষ্টা করা হচ্ছে । আশা করি ফলাফল হবে। মূলহোতা প্রধান আসামিকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে আদালতে মূল ঘটনা উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এজহার সূত্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসামি আব্বাস মিয়া ১৩ জুলাই সকাল ৭টায় কাজির বাজার শাপলা হোটেলে চা খাওয়ার জন্য যান।হোটেল কর্মচারী রুমন কে চা দিতে বলেন। কিন্ত চা দিতে দেরি হবে বলায় রোমানের সাথে শুরু করেন উচ্চ বাক্য গালিগালাজ। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে হোটেল মালিক ও উপস্থিত লোকজন মীমাংসা করে দেন। কিন্তু সকাল ৯ টায় আব্বাস মিয়া তার ছেলে খোকন( ৩৫), মোহন( ৩৭), রোকন (৩০), রুহান (২৫) সহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নিয়ে শাপলা হোটেলে ভেতরে ঢুকে শাটার বন্ধ করে হোটেল কর্মচারী রুমনের ঊপর চালান অমানবিক নির্যাতন।
দেশীয় অস্ত্র দিয়ে একের পর এক স্টপিং এতে অনেকটি লক্ষ্যভ্রষ্ট বুকে আর দুপাশে চারটি স্তূপিং এর দৃশ্যমান চিহ্ন রয়েছে হোটেল কর্মচারী খুন হওয়া দিদার আহমদ রুমনের শরীরে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর কিলিং মিশন শেষ করে আব্বাস বাহিনীর প্রধান আব্বাস তার বাহিনী নিয়ে ঘটনা স্থল ত্যাগ করেন। দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত থাকায় কেউ তাদের আটকাতে সাহস করে নি।
ঘটনার মূলহোতা আব্বাস (৫৫) তোপখানা আফজাল মিয়ার কলোনিতে ভাড়াটি থাকেন দীর্ঘদিন থেকে। তার মূল বাড়ি সুনামগঞ্জে।
দীর্ঘদিন থেকে সিলেটে থাকার সুবাদে একটি বিশেষ মহলের শেল্টারে আব্বাস গড়ে তুলেছেন একটি অপরাধী সিন্ডিকেট ।
কেউ কেউ মৎস্যজীবী হিসেবে আব্বাসকে চিনলেও অন্যরা চিনে রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট ব্লেকার হিসেবে। দীর্ঘদিন আগে থেকে আব্বাস সিলেট শহরে এসে আওয়ামী লীগের নেতাদের শেল্টারে অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করলেও ৫ আগস্টের পর কোন এক বিএনপি নেতার ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে এই আব্বাস বলে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অনেকেই জানিয়েছেন।
রাত্রিকালীন সময়ে ও ভোর রাতে আব্বাসের ছেলেরা সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে কাজির বাজার রোডের বিভিন্ন পয়েন্টে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অত পেতে থাকে। ঘটায় বিভিন্ন অপকর্ম ও চুরি, ছিনতাই। কিন্তু মানুষজন ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে নালিশ পর্যন্ত করেনা। আব্বাসের সকল অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বের হয় ঘর থেকে। ঘটনার দিন একই রকম তারা বাইরে ছিল খবর পেয়ে আসতে দেরি হয় ৭ টার ঘটনা ৯টায় ঘটে।
মামলা আসামিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে দক্ষিণ সুরমা মোগলা বাজার জালালপুর ও সিলেট নগরীতে চলছে একের পর এক বিক্ষোভ।
জালালপুর এলাকার বাসিন্দা আজাদ মিয়া জানান, ন্যায়বিচার বঞ্চিত হলে প্রমাণ হত্যা মামলা নিয়ে রাজপথের সোচ্চার হবে এলাকাবাসী।
মোগলাবাজার এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ হাসিনা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা সাংবাদিক নেতা এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া,এ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
রুমন খুনের ঘটনায় তার ভাই মো: রেজু মিয়া বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। যার নং-১৯
রুমন মোগলা বাজার থানার জালালপুর এলাকার সব্দালপুর গ্রামের মৃত তখলিছমিয়ার পুত্র ।
সিলেট মহানগর পুলিশের এডিসি মিডিয়া সাইফুল ইসলাম জানান, রুমন হত্যা মামলার ঘটনাটি পুলিশের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে দেখা হচ্ছে। চৌকোস কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন এজহার নামীয় আসামি ও জড়িতদের গ্রেফতার করতে।
প্রধান আসামি রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ৩দিনের।জিজ্ঞাসাবাদে আসতে পারে চাঞ্চল্যকর তথ্য বলে আমরা আশাবাদী।