সুনির্মল সেন :: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ, ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র প্রতিহত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার দাবিতে ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংগঠনটি তাদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করে।
‘মঞ্চ ৭১’-এর সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বীর প্রতীক) ও মুক্তিযোদ্ধা জেড আই খান পান্না স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধু ভূখণ্ড, পতাকা বা জাতীয় সংগীতের নাম নয়- এটি বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদার প্রতীক। হাজার বছরের স্বপ্ন ও আত্মত্যাগের ফসল। অথচ আজ আমরা গভীর বেদনা ও ক্ষোভ নিয়ে দেখছি, এ ইতিহাস মুছে ফেলার একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আগস্ট অভ্যুত্থানের পর ঘোষিত কথিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এবং বিভিন্ন বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অবমাননা ও বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে।”
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো:
১. জুলাই ঘোষণাপত্রে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোনো বক্তব্য বা ব্যাখ্যা রাখা যাবে না; থাকলে তা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করা হবে।
২. মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা বাদ দিয়ে তথাকথিত নতুন সংবিধান প্রণয়নের যে চেষ্টা চলছে, তা বাঙালি জাতি কখনও মেনে নেবে না।
৩. কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতার দায়ে সকল মুক্তিযোদ্ধাকে দায়ী করা যাবে না।
৪. যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে, ইতিহাস বিকৃত করছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় করছে, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করে বিচার করতে হবে।
৫. ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানাতে হবে—তারা কী মনে করেন, কী করবেন এবং কী করবেন না।
সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এই দাবিগুলো উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করা হলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানী ঢাকায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রয়োজনে ইতিহাস রক্ষার জন্য জীবনবাজি রাখতেও প্রস্তুত তারা।
নতুন এই প্ল্যাটফর্মের অন্যতম সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, “আমাদের এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। এটি ইতিহাস, স্বাধীনতা এবং শহীদের রক্তের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে উৎসারিত।”